এই শহরে তুমি বাস করবে
কাজে অকাজে দৌড়বে এদিক ওদিক,
কোথাও আড্ডা দেবে অবসরে
মদ খাবে, তুমুল হইচই করবে,
রাত ঘুমিয়ে যাবে, তুমি ঘুমোবে না।
ফাঁক পেলে কোন কোন সন্ধ্যে
এ বাড়ি ও বাড়ি খেতে যাবে, খেলতে যাবে
কে জানে হয়তো খুলতেই যাবে আলগোছে কারোর শাড়ি
আমার আঙিনা পেরিয়েই কোন বাড়িতে হয়তো।
এ পাড়াতেই হয়তো দুবেলা হাঁটাহাঁটি করবে
হাতের নাগালেই থাকবে,
হয়তো কখনও জানিয়েই দেবে আমাকে
যে, কাছেই আছো।
কুঁকড়ে যেতে থাকবো,
কুচি কুচি করে নিজেকে কাটতে থাকব
দেখা না হওয়ার যন্ত্রণায়,
তবু বলবো না এসো।
বলবো না,
তোমাকে সুযোগ দেব না বলার,
যে তোমার সময় নেই,
বা ভীষণ ব্যস্ত তুমি ইদানীং।
তোমার অপ্রেম থেকে নিজেকে বাঁচাবো আমি
তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না।
বছর পেরোবে,
তোমার সঙ্গে দেখা হবে না আমার
তোমার সঙ্গে দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো,
তোমার সঙ্গে দেখা হওয়াটা ঠিক কেমন ছিল।
কী রঙের শার্ট পরতে ?
হাসলে তোমাকে ঠিক কেমন দেখাতো
কথা বলার সময় নখ খুঁটতে,
চোখের দিকে নাকি অন্য কোথাও তাকাতে,
পা নাড়তে, ঘনঘন চেয়ার ছেড়ে উঠতে
জল খেতে কিনা, ভুলতে থাকবো।
দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো
তুমি ঠিক দেখতে কেমন ছিলে।
তিল গুলো ঠিক মুখে কোথায় কোথায় ছিল
অথবা আদৌ ছিল কিনা,
তোমার চুমু খাওয়া গুলো
জড়িয়ে পেঁচিয়ে চুলে বা বুকে মুখ গোঁজা গুলো
ঠিক কেমন, ভুলতে থাকবো।
অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবে
তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না,
এক শহরেই, অথচ দেখা হবে না।
পথ ভুলেও কেউ কারও পথের দিকে হাঁটবো না
আমাদের অসুখ বিসুখ হবে, দেখা হবে না।
কোনও রাস্তার মোড়ে, কিংবা পেট্রোল পাম্পে
কিংবা মাছের দোকানে, বইমেলায়, রেস্তোরাঁয়,
কোথাও, কোথাও দেখা হবে না।
আরও অনেকগুলো বছর পর
ভেবে রেখেছি,
যেদিন হুড়মুড় করে একঝাঁক আলো নিয়ে
সন্ধ্যে ঢুকতে থাকবে আমার নির্জন ঘরে,
যেদিন বারান্দায় দাঁড়ালে আমার আঁচল উড়িয়ে
নিতে থাকবে বুনো বৈশাখী,
এক আকাশ চাঁদের সঙ্গে কথা বলবো
যে রাতে সারারাত,
তোমাকে মনে মনে বলবোই সেদিন
কী এমন হয়, দেখা না হলে?
দেখা না হলে বুঝি বেঁচে থাকা যায় না?
কে বলেছে যায় না, দেখো, দিব্যি যায়!
তোমার সঙ্গে দেখা হয়নি কয়েক হাজার বছর,
তাই বলে কি আর বেঁচে ছিলাম না?
দিব্যি ছিলাম!
ভেবেছি বলবো,
তুমি তো আসলে একটা কিছুই-না ধরনের কিছু
আমার আকাঙ্খা দিয়ে এঁকেছিলাম তোমাকে,
আমার আকাঙ্খা দিয়ে তোমাকে প্রেমিক করেছিলাম,
আমার আকাঙ্খা দিয়ে, তোমাকে অপ্রেমিকও করেছি
তোমাকে না দেখে
লক্ষ বছরও বেঁচে থাকতে পারি,
অপ্রেমিককে না ছুঁয়ে, অনন্তকাল।
একফোঁটা চোখের জল বর্ষার জলের মতো ঝরে
ধুয়ে দিতে পারে এতকালের আঁকা সবগুলো ছবি,
তোমার নাম ধাম দ্রুত মুছে দিতে পারে চোখের জল
তোমাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।
আমাকে একা বলে ভেবোনা কখনো,
তোমার অপ্রেম আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।।
এক অপ্রেমিকের জন্য কবিতা – তসলিমা নাসরিন :
Tomar songge dekha hoyni koyek hajar bochor
Tai bole ki aar beche chilam na
Dibbi chilam, vebechi bolbo
Tumi to asole ekta kichui na dhoroner kichu
Amar akankha diye ekechilam tomake
Amar akankha diye tomake premik korechilam
Amar akankha diye tomake opremik korechi
Tomake na dekhe
Lokkho bochoro beche thakte pari
Opremik ke na chuye onontokal